‘বাংলাদেশে বিয়ে করতে মাল সামানা বেশি দিতে হয়। কিন্তু এত টাকা পাবো কোথায়। মা নেই, বাবা নেই। মালয়েশিয়াতে পরিচিত অনেকে আছে। ভেবেছিলাম, ওখানে গিয়ে তাদের কাউকে বিয়ে করে ফেলবো। কাজ নয়, বিয়ে করতেই মালয়েশিয়া যাচ্ছিলাম।’ ফেরত আসা রোহিঙ্গা নারী হতিজা বেগম এমনটাই বললেন।
উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ট্রলারে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছিলেন হতিজা বেগম। কিন্তু মালয়েশিয়া সীমান্তে পৌঁছেও সে দেশে কড়াকড়ির কারণে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন তিনি।
বুধবার রাতে তিন শতাধিকের বেশি রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে টেকনাফ জেটিতে নিয়ে আসে কোস্ট গার্ড, বিজিবি ও পুলিশ। সেখানেই হতিজার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
হতিজা বেগম বলেন, সাগরে একদিন ভাসমান ছিলাম। ট্রলারে ২৮ জনের প্রাণহানি হলেও আমি বেঁচে যাই। আমার অনেক আত্মীয় মালয়েশিয়ায় আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে তেমন কোনো যোগাযোগ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় একদল রোহিঙ্গা যুবকের বিয়ের প্রলোভনে পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিচ্ছিলেন নারীরা।
টেকনাফ কোস্ট গার্ডের স্টেশন ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম সোহেল রানা বলেন, উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা সবাই একটি জাহাজে করে কিছুদিন আগে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাত্রা করেছিল। কিন্তু নানাভাবে চেষ্টার পরও তারা মালয়েশিয়া ভিড়তে না পারায় বাংলাদেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম সোহেল রানা আরো বলেন, ট্রলারে প্রায় চারশ রোহিঙ্গা ছিলেন। তাদের মধ্যে নারী অর্ধেক। নারীদের অনেকেই বিয়ের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। নানা প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব রোহিঙ্গাদের ইউএনএইচসিআর-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সময/দেম/আন্ত