সালথায়আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ‘হেফাজত ইসলাম নব্য রাজাকারের দল’-হানিফ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Thursday, April 08, 2021

সালথায়আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ‘হেফাজত ইসলাম নব্য রাজাকারের দল’-হানিফ



ফরিদপুর প্রতিনিধি :
আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি আর নব্য রাজাকারের দল হেফাজত ইসলাম দেশকে আফগানীস্তান-পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। মাদ্রাসায় বসে জঙ্গী কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশকে অশান্ত করার মিশনে নেমেছে। এরই অংশ হিসাবে পরিকল্পিত ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে জ¦ালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনিএসব কথা বলেন। মাহাবুবুল আলম হানিফ হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, যারা জ¦ালাও-পোড়াও করছে তারা রেহাই পাবেন না। তিনি বলেন, যারা দেশের উন্নয়ণ এবং অগ্রগতি মেনে নিতে পাওে নাই, যারা একাত্তরের পরাজিত শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাত তাদের দোসর বিএনপি আর নব্য রাজাকারের দল হেফাজত ইসলাম তারা একত্র হয়ে এই নারকীয় হামলায় অংশ নিয়েছে। হেফাজত ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বিরোধী এরা বাংলাদেশের সংবিধান মানতে চায়না, এরা দেশের জাতীয় সংগীত গাইতে চায়না, এরা জাতীয় পতাকারও সম্মান করতে চায়না। এরা বাংলাদেশকে তালেবানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। যার কারনে এরা কোন ইস্যু ছাড়াই, কোন কারন ছাড়াই এ ধরনের হামলা চালিয়েছে। এরা রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করেছে। যারা রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংসের সাথেই জড়িত রয়েছে, জ্বালাও পোড়াও করেছে তাদের প্রত্যেককে খুঁজে খুঁজে বের করে কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে। একজনকেও রেহাই দেওয়া হবেনা। আমরা প্রশাসনকে কঠোর ভাবে নির্দেশনা দিয়েছি, যারা সরাসরি হামলায় জড়িত, যারা ইন্ধন দিয়েছে, যারা পরামর্শ দিয়েছে, তারা যে দলেরই হোক, যত শক্তিশালী ব্যক্তিই হোক তাদের বিচার করা হবে। তাদের কঠোর শাস্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হবে রাষ্ট্রের শক্তির কাছে কোন শক্তিই কাজে আসবেনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় বিএনপি-জামাত জ¦ালাও পোড়াও কওে বিচারকে বাঁধাগ্রস্থ করতে চেয়েছিল কিন্তু তারা পারেনি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ কওে যাচ্ছেন। যারাই এই উন্নয়ন আর অগ্রগতির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবেন তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবেনা। 


এসময় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল ফারুক খান এমপি বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হবে। আমরা প্রশাসনকে বলেছি ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করুন। কোন নিরীহ কাউকে যেনো হয়রানী করা না হয়। আর জড়িতদের মধ্যে যদি আওয়ামী লীগের কেউও থাকে তাকেও যেনো রেহাই দেয়া না হয়।


প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান স্থানীয় একজন হেফাজত নেতার (মাওলানা আকরাম হোসেন) নামোল্লেক করে বলেন, তিনি হেফাজত ও বিএনপি জামাতের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন।


সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফমবাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুবল সাহা, সহ সভাপতি শামীম হক, সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ঝর্না হাসান, মহিলা সম্পাদিকা আইভি মাসুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক ভোলা মাস্টার, পৌর মেয়র অমিতাব বোসসহ জেলা ও উপজেলাআওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।


পরে নেতৃবৃন্দ ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামনকে সাথে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, বাসভবন ও ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন।


লকডাউনের পরিস্থিতি দেখতে সালথা উপজেলার এসিল্যান্ড মারুফা সুলতানা স্থানীয় একটি বাজারে গেলে ব্যবসায়ীদের সাথে তার সহকারীদের বাদানুবাদ হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপর তারা আক্রমন করে। এ ঘটনার পর রাতে স্থানীয় বিক্ষুব্দ কয়েক হাজার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে গুজব রটিয়ে সালথা উপজেলা পরিষদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত অবস্থায় দুইজন মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশের তরফ থেকে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তরফ থেকেও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


 

অপরদিকে বিকেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের তরফ থেকে সালথা বাজারে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা অভিয়োগ করে বলেছেন গত ৫ তারিখের হামলার ঘটনায় নব্য আওয়ামীলীগের একটি পক্ষ তাদেরকে এর ভিতর জরিয়ে বক্তব্য বিবৃতি প্রদান করছে। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। 


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাধারন সম্পাদক ফায়েকুজ্জামান ফকির মিয়া, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শাহেদুজ্জামান শহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির চৌধুরী, খন্দকার সাজিদ, সানোয়ার হোসেন সহ অনেকে। 


তারা আরো বলেন ওই দিন বিএনপি, জামাত ও হেফাজতের মাধ্যমে এই হামলা হয়। এসময় নব্য কিছু আওয়ামীলীগের অংশ থাকলেও থাকতে পারে। হামলায় অংশ নেয়া ওই নব্য আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা বাচঁতে ত্যাগী নেতাকর্মিদের নাম দিয়ে বাচাঁর অপচেষ্টা করেছেন। তারা এই ধরনের বক্তব্যর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ওই সংবাদ সম্মেলনে।

No comments: