৫ সন্তানের জননীর সাথে চেয়ারম্যানের পরকীয়া,স্বামীর বিষপানে আত্বহত্যা | সময় সংবাদ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Tuesday, March 29, 2022

৫ সন্তানের জননীর সাথে চেয়ারম্যানের পরকীয়া,স্বামীর বিষপানে আত্বহত্যা | সময় সংবাদ

৫ সন্তানের জননীর সাথে চেয়ারম্যানের পরকীয়া,স্বামীর বিষপানে আত্বহত্যা | সময় সংবাদ


সোহেল হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে স্ত্রীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায়, স্ত্রী সন্তান ও শাশুড়ীর নির্যাতন সইতে না ফেরে লজ্জায় বিষপ্রাণে আত্মহত্যা করেন পাঁচ সন্তানের জনক শামসুল হক ওরপে বেছা (৫০), নামের এক ব্যক্তি। গত সোমবার (২১ মার্চ) বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন রাতে তাকে দাফন করা হয়। মৃত বেছা সদর উপজেলার ১৬নং শাকচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। অভিযুক্ত ব্যক্তি একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের ছেলে রাসেল। ইতিপূর্বে সেও চেয়ারম্যান ছিলো।


মৃতের ভাই গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, শামসুল হক (বেছা) একজন সৎ, সহজ সরল ব্যক্তি ছিলেন। তার স্ত্রীর পরকীয়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রী বকুলী বেগম (৩৫) ছোট হৃদয় (১৮), এবং তার শাশুড়ি হাজেরা বেগম (৫৫), মিলে তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। একে পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ ঘটনার পরের দিন সে লজ্জায় বিষ পান করে। পরে লোকজন তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে অবস্থা অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তার মৃত্যু হয়।


বেছার ভাতিজা ইউসুফ বলেন, তারা আমার চাচকে হত্যা করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই। আমার চাচা হত্যার বিচার চাই।


শামছুল হক বেছার মেজো ছেলে শরীফ জানান, আব্বু ও আম্মুর মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান রাসেলের সঙ্গে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে আব্বু আম্মুর চুল ধরে নীচে ফেলে দেয়। আমি,আমার ভাই হৃদয়, ও আমার নানী আব্বুর হাত থেকে আম্মুকে ছাড়ানোর চেষ্টা করি তখন আমার ছোট ভাই কিছু একটা দিয়ে আব্বুকে আঘাত করেছিল সেজন্য আব্বু সাময়িক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু জ্ঞাণফেরার পরে আমি আব্বুকে বুঝানোর পর সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়। এতেই আব্বু আত্মহত্যা করবে সেটা বুঝতে পারিনি।


মৃতের স্ত্রী বকুলী বেগম বলেন, পছন্দ করেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল। দুজনের মধ্যে খুব ভালোবাসা ছিল। কখনও কোন ঝামেলা হয়নি। কয়েক বছর আগে আমার একটা বোন ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মারা যায়, সেই ঝামেলা মিট করতে মৃত জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের ছেলে সাবেক চেয়ারম্যানের রাসেল শরণাপন্ন হই। পঞ্চাশ হাজার টাকা ডাক্তারের থেকে এনে রাসেল চেয়ারম্যান নিজেই ভোগ করেন। সেটা নিয়ে তার সঙ্গে কয়েকবার দেখা করি। তবে তার সঙ্গে কোন পরকীয়া হয়নি। কিন্তু আমার স্বামী গত তিন বছর ধরে আমাকে তার সঙ্গে পরকীয়া আছে বলে সন্দেহ করে এবং এই নিয়ে পূর্বেও কয়েকবার ঝগড়া করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর আমি অন্য এক বাসায় যাই, আমার স্বামী রাসেলের সঙ্গে দেখা করেছি বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার চুলের মুষ্টি ধরে মারধর করে। আমার মা ও ছেলেরা আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ছোট ছেলে মোবাইল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। পরের দিন সে বিষ পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। আমরা তাকে হাসপাতালে নেই। চিকিৎসাধীন অবস্থা তার মৃত্যু হয়।


কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, শামসুল হক পেশায় একজন অটো চালক। খুব ভালো মানুষ ছিল এবং নিয়মিত নামাজ পড়তো সে। জানাযায় উপস্থিত মানুষই তার প্রমান। তার স্ত্রীর সাথে সাবেক চেয়ারম্যান রাসেলের সঙ্গে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ঝগড়া হত। মঙ্গলবার রাসেলের পরকীয়া নিয়েই ঝগড়া থেকে মারামারি হয়। স্ত্রী, শাশুড়ি ও ছোট ছেলে তাকে মারধর করে। সেই লজ্জা সহ্য করতে না পেরেই বেছা বিষ প্রাণে আত্মহত্যা করে।


পরকীয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। এসময় মৃত বাবা-মায়ের কবর ছুঁয়ে তিনি আরও বলেন, বকুলির সঙ্গে আমার কোন পরকীয়া নেই। আমি একজন ভালো মানুষ। এটা আমার উপর সাজানো একটা মিথ্যা অপবাদ।



No comments: