ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র প্রান্ত মিত্র হত্যাকান্ডের দুইদিন পর থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে প্রান্তের বাবা বিকাশ মিত্র বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত চললেও এখনো হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। এ ঘটনা আটকও হয়নি এ পর্যন্ত কেউ। এরই মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সংগঠন থেকে এ বিষয়ে মানববন্ধন ও মিছিল করে দায়ীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হাসান বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে জোর চেষ্টা চলছে। পুলিশের একাধিক টিম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছে। তথ্য প্রযুক্তি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তারা খুনিদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানাদাস গুপ্ত।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী জেএল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার প্রান্ত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন।
একই দাবিতে মানববন্ধন করে ২৪ ঘন্টার আলটিমেটাম দেয় ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ বুধবার। একই সাথে বৃহস্পতিবার সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষ থেকেও মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়েছে জড়িতদের আটক ও বিচার দাবি করে।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, প্রান্ত হত্যা মামলায় বুধবার রাতে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তে পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করছি শীঘ্রই জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন বলেন, জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে নিরলসভাবে কাজ করছে। শহরের সংশ্লিষ্ট এলাকার সকল সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সেই সাথে তথ্য প্রযুক্তিও ব্যবহার করে জড়িতদের সনাক্তের জোর চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের ওয়ারলেসপাড়ার ভাড়ার বাসা থেকে একটি রিকশাযোগে শিশু হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে ছুরিকাঘাতে নিহত হন প্রান্ত। এ ঘটনার পর প্রান্তর বন্ধু হৃদয়কে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। নিহত প্রান্ত রাজেন্দ্র কলেজের বোটানী ডিপার্টমেন্টের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো। সে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লীনের সক্রিয় সদস্য ছিলো। এছাড়া সে ফরিদপুরে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো। রাজবাড়ীর পাচুরিয়ায় তাদের বাড়ি। তার বাবা একটি বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতা করার সুবাদে পরিবার নিয়ে ফরিদপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।