![]() |
মানব পাচার মামলায় ১৫ বছর পর ফরিদপুরে আসামির যাবজ্জীবন |
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে দীর্ঘ ১৫ বছর পর এক মানব পাচার মামলার রায়ে আসামি মো. শাহীনুর রহমান ওরফে সবুজ শেখকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত শাহীনুর রহমান (৩৭) কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বন্দিগাঁ গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখের ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মধুখালী উপজেলার ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারক শাহীনুর রহমানের। পরে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট ওই তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে যান শাহীনুর। পরে প্রমাণিত হয়, তিনি বিয়ের নাটক সাজিয়ে তরুণীকে ভারতে পাচার করেছেন।
কিছুদিন পর ভারতের এক আইনজীবী পরিচয়ে ভুক্তভোগীর বাবাকে জানানো হয়, তার মেয়ে কলকাতার দমদম সেন্ট্রাল জেলে আটক আছে। পরবর্তীতে সেখানকার শৌচাগারে আত্মহত্যা করেন ওই তরুণী।
পরে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ও মধুখালী মহিলা পরিষদের সহযোগিতায় কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের মাধ্যমে মরদেহ দেশে আনা হয়।
২০১০ সালের ২৪ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর বাবা ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মানব পাচার আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১৫ মার্চ মধুখালী থানার এসআই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সরকারি কৌশলী (পিপি) গোলাম রব্বানী ভুইয়া বলেন, “মানব পাচার প্রতিরোধে এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। প্রতিনিয়ত নারীরা বিয়ে বা চাকরির প্রলোভনে বিদেশে পাচার হয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, এমনকি প্রাণও হারাচ্ছেন। এই রায় ভবিষ্যতে মানব পাচার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”