![]() |
| লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের মামলায় তদন্ত বিভ্রাটে বিএমইউজের উদ্বেগ |
সোহেল হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে উপজেলা পরিষদের নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তা মোস্তফা তারেক ইকবাল ওরফে রবিন পাটওয়ারীর মৃত্যুর ১৪ মাস পরও রহস্যের কোনো সমাধান মিলেনি। অথচ মামলায় ৪ সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হলেও প্রকৃত দায়ীদের এখনও আইনের আওতায় আনা হয়নি। তদন্তে গড়িমসি ও অস্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএমইউজে), সাংবাদিকদের স্বজন, এলাকাবাসী এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ২৭ অক্টোবর ২০২৪ দুপুরে স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইত্তেফাকের প্রতিনিধি জাকির হোসেন মোস্তান, যায়যায়দিনের বেলায়েত হোসেন বাচ্চু, সমকালের জাকির হোসেন সুমন এবং দৈনিক মানবকণ্ঠের শাখায়াত হোসেন জাহাঙ্গীর পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের রামগঞ্জ অফিসে বক্তব্য নিতে যান। অভিযুক্ত ফিল্ড অফিসার ইমাম হোসেন ও ব্যাংক ব্যবস্থাপক উপস্থিত না থাকায় তারা অফিস ত্যাগ করেন।
এর কয়েক ঘণ্টা পর ইউএনও অফিসের নির্মাণাধীন ভবনের চারতলা থেকে পড়ে ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার মোস্তফা তারেকের মৃত্যু হয়। সংবাদকর্মীরা বিষয়টি নিশ্চিত হতে থানায় গেলে বিকেল ৪টার দিকে ওসি আবুল বাশার ৪ সাংবাদিককে আটক করেন। রাত ৩টার দিকে নিহতের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রিমুকে বাদী করে মামলা রুজু করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। পরদিন ২৮ অক্টোবর, আটকের ২৩ ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। ৫৫ দিন কারাভোগের পর আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামগঞ্জ থানার এসআই বাবর আলী দীর্ঘ নয় মাস তদন্ত পরিচালনা করেও কোনো চার্জশিট না দিয়ে ‘অদৃশ্য প্রভাবের’ কারণে মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করেন বলে অভিযোগ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খাদিজাতুল কোবরা। তিনি বলেন, “অনুমতি ছাড়াই সাংবাদিকদের আটক, মামলা রুজু এবং দেরিতে আদালতে পাঠানোর মাধ্যমে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”
সাংবাদিকদের গ্রেফতারের ঘটনায় রামগঞ্জ প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, রিপোর্টার্স ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সাংবাদিক নেতাদের অভিযোগ—একটি প্রভাবশালী মহল প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সোহেল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান বলেন, “আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রকৃত আসামিদের আড়াল করার চেষ্টায় তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলানো হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত নাটের গুরুদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”

