![]() |
| চট্টগ্রামে শীর্ষ সন্ত্রাসী বুইশ্যা অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার, আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি |
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম নগরীর অপরাধ জগতের ত্রাস এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শহিদুল ইসলাম ওরফে বুইশ্যাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৭। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে পাঁচলাইশ এলাকার ফিনলে স্কয়ার মার্কেটের সামনে থেকে তাকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ আটক করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে আহত হওয়ায় বর্তমানে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
র্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরের ব্যস্ততম ২ নম্বর গেইট এলাকার ফিনলে স্কয়ারের সামনে অবস্থান নেয় র্যাবের একটি দল। বুইশ্যা মোটরসাইকেল যোগে ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় তাকে থামার সংকেত দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করলে ভারসাম্য হারিয়ে তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়ে আঘাত পান। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। তল্লাশিকালে তার কাছ থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র দাবি করেছে, গ্রেপ্তারের সময় ওই এলাকায় কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের শব্দ শোনা গেছে।
গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম বুইশ্যা ভোলা জেলার দৌলতখান থানার ভাণ্ডারী বাড়ির মোহাম্মদ আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার পশ্চিম ষোলশহর এলাকার বদিউল আলম গলিতে বসবাস করেন। পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, বুইশ্যার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানাসহ নগরীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও ছিনতাইসহ অন্তত ১৯টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও এলাকা ঘিরে বুইশ্যার নেতৃত্বে একটি দুর্র্ধষ অপরাধচক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। ২০২২ সালেও তিনি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিনে বেরিয়ে আসার পর তিনি পুনরায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন এবং নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন।
গত ৯ অক্টোবর এবং ৬ ডিসেম্বর পৃথক অভিযানে বুইশ্যা বাহিনীর চার সদস্য—বেলাল, হৃদয় বড়ুয়া, মো. আজাদ ও ইমন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ওই অভিযানগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি পিস্তল, বন্দুক, ড্রোন, ওয়াকিটকি এবং টাকা গণনার মেশিন উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই সময় মূল হোতা বুইশ্যা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এবার র্যাবের হাতে ধরা পড়লেন তিনি।
র্যাব-৭ জানিয়েছে, শীর্ষ এই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে নগরীর একটি বিশাল অপরাধী চক্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র এবং তার বিরুদ্ধে থাকা পূর্বের মামলাগুলোর ভিত্তিতে নতুন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বর্তমানে কড়া পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

