সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর থেকে :
প্রেম কথাটিই স্বর্গীয়, যা কিনা বয়স আর ধর্ম না মেনেই পথ চলে তার ইচ্ছা খেয়াল খুশি মতো। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরের সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা অজো পাড়াগায়ে। ৪৫ বছর বয়সি আমেরিকান নারী শ্যারণ নিজ দেশ ধর্ম আর বয়সকে তুচ্ছ মনে করে ফরিদপুরের অজো পাড়াগায়ে যুবক সিংকুর সাথে বিবাহে আবদ্ধ হলেন। বুধবার দুপুরে এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে বৌভাত অনুষ্ঠিত হলো। বৌভাতে এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ সহ সকলেই অংশ নেয়। এর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়ে শ্যারন ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আসে প্রেমের টানে। এরপর ২০ এপ্রিল বিয়ে করেন ঝাউখোলা গ্রামের সরকারী দপ্তরের গাড়ী চালক আলাউদ্দিন মাতুব্বরের পুত্র মোঃ আশরাফ উদ্দিন সিংকুকে। সিংকু জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে মাষ্টার্সে পড়াশুনা করছেন।
এদিকে বিয়ে করে একবছর আগে যাওয়া শ্যারন আবার ফিরে আসে গত ২০ সেপ্টেম্বর। এরপর কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামে এসে বৌভাতের আয়োজন করলেন। এলাকার মানুষের মধ্যে একজন বিদেশীর সাথে এলাকার যুবকের বিবাহ হচ্ছে তা তাদের মনেই হচ্ছে না। নববধুর আচরণ খোলামেলা হওয়ায় তাদের আন্তরিকতার ঘাটতিও নেই। নববধু বাংলা না বুঝলেও তার ভাব ভঙ্গিতেই তারা বুঝে নিচ্ছে কি বলতে চাচ্ছে নববধূ।
সিংকুর পিতা আলাউদ্দিন বলেন, আমদের সাথে বৌমা খুব ভালো ব্যবহার করছে। আমরা অত্যান্ত খুশী। বাংলা না বুঝলেও আমাদের ভাষা তার বুঝতে কষ্ঠ হচ্ছে না।
সিংকু বলেন, প্রেম বয়স আর ধর্ম মানে না। আমি শ্যারণকে অত্যান্ত ভালোবাসি। শ্যারণও আমাকে ভালোবাসে বলেই আমাদের বিবাহ হয়েছে। তিনি বলেন আগের বার এসে আমার পরিবারকে সে খুব আপন করে নিয়ে ছিলো এবারও তাই। এখন বৌভাত অনুষ্ঠান হয়ে গেল। সামনের ৮ অক্টোবর সে চলে যাবে। এরপর পরই আমি চলে যাব শ্যারনের কাছে আমেরিকা।
কনে শ্যারণ বলেন, আমি এদেশকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। আমার ভালাবাসাই প্রমান হিসাবেই এই বিবাহ। সিংকুর হাত ধরে আমি সারা জীবন কাটাতে চাই বলে তিনি জানান।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, একটি ভিন দেশী নারী আমাদের দেশের গরীব একটি ছেলেকে ভালোবেসে বিবাহটাই প্রমান করে বাংলাদেশ তথা বাংলার মানুষ বিশে^র অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে কতোটা প্রিয়।
আর এই বিবাহর মধ্য দিয়ে সিংকু ও শ্যারনের যুগল বন্ধন অটুট থাক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর ও পরিবারের।


