ঝোটন চন্দ :
বিশ্বায়নের যুগে আজ সারা পৃথিবীকে একটি বৈশ্বিক গ্রাম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যোগ্য ও দক্ষ জনগণের জন্য আজ সকল দেশ ও কর্মক্ষেত্রের দ্বার উন্মুক্ত। বাংলাদেশের কর্মী ও শ্রমিকরাও এতে পিছিয়ে নেই। আজ বিশ্বের প্রায় ১৫০ টিরও বেশি দেশে কোন না কোন কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের খুজে পাওয়া যায়, যদিও অনেকেই শারীরিক শ্রমের প্রয়োজন হয় এমন কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত এবং স্বল্প মজুরিতে কাজ করে। স্বল্প বেতন ও তুলনামূলক কম মর্যাদাপূর্ণ কাজ করার অন্যতম কারণ প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও ভাষার জ্ঞান না থাকা। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই সীমাবদ্ধতাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে আরও উন্নতি লাভ করতে পারে। এর অংশ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রাথমিক পর্যায় হতেই শিশুদের বিদেশী ভাষায় প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
সারা পৃথিবীতে কয়েক হাজার ভাষা থাকলেও ইংরেজি, ফরাসি,জার্মান, ইতালি, আরবি, স্প্যানিশ, হিন্দী, চীনা সহ অল্প কিছু ভাষায় বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ কথা বলে এবং এসকল ভাষাভাষীর মানুষের দেশেই বেশিরভাগ কর্মসস্থানের সুযোগ থাকে। কিছু কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ভাষাসমূহের উপর স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও এর মান যুৎসই নয়। তাই শুরুতে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় অন্তত একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষাসমূহের প্রাথমিক (Elementary) কোর্স চালু করা যেতে পারে। এতে শিশুরা খেলাচ্ছলে কোন নির্দিষ্ট একটি ভাষার বর্ণমালা, প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনীয় এমন কিছু শব্দ ও ছোট ছোট বাক্য তৈরি করতে শিখবে। নিজের অজান্তেই তাদের বিদেশী ভাষার প্রতি ভীতি ও জড়তা কমে আসবে।
প্রাথমিক পর্যায় হতেই এরূপ ভাষা শিক্ষার পক্ষে আরেকটি যুক্তি হলো শিখন ও মনন প্রক্রিয়ায় শিশুরা যে কোন নতুন বিষয়ের প্রতি অত্যন্ত কৌতুহলী। সঠিক পরিবেশ থাকলে একটি শিশুর পক্ষে ছোটবেলা থেকেই সঠিক উচ্চারণ সহ ভাষার মৌলিক ব্যাকরণ যেভাবে আয়ত্ত করা সম্ভব একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পক্ষে তা আরও কঠিন। বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমআইটি (MIT) কর্তৃক পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে ১০ বছর বয়সে ২টি ভাষা শিখেছে এমন মানুষের মধ্যে নির্ভুল ও সঠিক উচ্চারণসহ ভাষা শেখার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এই হার ১৮-২০ বছর বয়সে তুলনামূলক কম এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে আরও কম, যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। শিশুদের মস্তিষ্ক নতুন শব্দ শেখার জন্য সবচেয়ে বেশি সচেতন ও উপযোগী থাকে। তারা ক্রমান্বয়ে উচ্চারণ, শব্দ, শব্দের গঠন ও বাক্য গঠন শিখে। এটা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত যে একজন প্রাপ্ত বয়স্কের তুলনায় একজন শিশুর পক্ষে দ্রততম সময়ে সবচেয়ে শুদ্ধ উচ্চারণ সহ ভাষা শেখা সম্ভব। মজার বিষয় হলো, বাল্যকাল থেকে একসাথে ২টি ভাষা শেখা শুরু করলে শিশুদের চেতনা, জ্ঞান ও বোধশক্তি অনেক উন্নত হয় এবং দ্রুত বিকাশ ঘটে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা শুধু একটি নতুন ভাষাই শিখে না, একই সাথে ঐ দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে যা তাকে আরো পরিণত ও সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করে।
বিদেশী ভাষার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা দীর্ঘদিন বিদেশে দাপ্তরিক কর্মে নিযুক্ত থেকে দেশে ফিরেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিভাগীয় শহর ও বড় জেলাসমূহে এরকম আঞ্চলিক কেন্দ্র খোলা যেতে পারে। এখানে উল্লেখ্য যে, ইউরোপের বহু উন্নত ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে (যেমন জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে) শুধু ঐ দেশের ভাষার উপর দক্ষতা থাকলে বিনাবেতনে ও বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। প্রাথমিকভাবে কিছু নির্বাচিত বিদ্যালয়ে ৩য়/৪র্থ শ্রেণি হতে বিদেশী ভাষার পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে যা উচ্চ মাধ্যমিক বা তদুর্দ্ধ পর্যায় পর্যন্ত চালু থাকবে যেন নির্দিষ্ট ভাষা অর্জনের পর তারা ডিপ্লোমা কোর্সের সমমান যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে যারা পরীক্ষা গ্রহণ ও মান যাচাই সাপেক্ষে সনদপত্র প্রদানে ভূমিকা রাখবে।
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও বিদেশী ভাষার যথেষ্ট গুরুত্ব থাকায় যুক্তিসংগত কারণেই প্রাথমিক পর্যায় হতেই এর চর্চা থাকা উচিত। বিদেশী ভাষায় পারদর্শী হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেরা উচ্চ বেতন পাওয়ার পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে। তারা বিভিন্ন দেশের সমাজে মিশে গিয়ে আমাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে পারবে। ভাষায় পারঙ্গম দক্ষ কর্মী বিদেশে থাকলে আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রভাবও বৃদ্ধি পাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতঃমধ্যে বিপুল জনসংখ্যাকে বোঝা হিসেবে বিবেচনা না করে জনসম্পদ হিসেবে বিবেচনা ও রুপান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যায়ক্রমে সঠিকভাবে বিদেশী ভাষার প্রচলন শুরু হলে খুব অল্প সময়েই আমরা আরো ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করবো। এতে করে কর্মীরা আত্মবিশ্বাসী হবে এবং বিদেশেও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
সারা পৃথিবীতে কয়েক হাজার ভাষা থাকলেও ইংরেজি, ফরাসি,জার্মান, ইতালি, আরবি, স্প্যানিশ, হিন্দী, চীনা সহ অল্প কিছু ভাষায় বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ কথা বলে এবং এসকল ভাষাভাষীর মানুষের দেশেই বেশিরভাগ কর্মসস্থানের সুযোগ থাকে। কিছু কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ভাষাসমূহের উপর স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও এর মান যুৎসই নয়। তাই শুরুতে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় অন্তত একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষাসমূহের প্রাথমিক (Elementary) কোর্স চালু করা যেতে পারে। এতে শিশুরা খেলাচ্ছলে কোন নির্দিষ্ট একটি ভাষার বর্ণমালা, প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনীয় এমন কিছু শব্দ ও ছোট ছোট বাক্য তৈরি করতে শিখবে। নিজের অজান্তেই তাদের বিদেশী ভাষার প্রতি ভীতি ও জড়তা কমে আসবে।
প্রাথমিক পর্যায় হতেই এরূপ ভাষা শিক্ষার পক্ষে আরেকটি যুক্তি হলো শিখন ও মনন প্রক্রিয়ায় শিশুরা যে কোন নতুন বিষয়ের প্রতি অত্যন্ত কৌতুহলী। সঠিক পরিবেশ থাকলে একটি শিশুর পক্ষে ছোটবেলা থেকেই সঠিক উচ্চারণ সহ ভাষার মৌলিক ব্যাকরণ যেভাবে আয়ত্ত করা সম্ভব একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পক্ষে তা আরও কঠিন। বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমআইটি (MIT) কর্তৃক পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে ১০ বছর বয়সে ২টি ভাষা শিখেছে এমন মানুষের মধ্যে নির্ভুল ও সঠিক উচ্চারণসহ ভাষা শেখার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এই হার ১৮-২০ বছর বয়সে তুলনামূলক কম এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে আরও কম, যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। শিশুদের মস্তিষ্ক নতুন শব্দ শেখার জন্য সবচেয়ে বেশি সচেতন ও উপযোগী থাকে। তারা ক্রমান্বয়ে উচ্চারণ, শব্দ, শব্দের গঠন ও বাক্য গঠন শিখে। এটা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত যে একজন প্রাপ্ত বয়স্কের তুলনায় একজন শিশুর পক্ষে দ্রততম সময়ে সবচেয়ে শুদ্ধ উচ্চারণ সহ ভাষা শেখা সম্ভব। মজার বিষয় হলো, বাল্যকাল থেকে একসাথে ২টি ভাষা শেখা শুরু করলে শিশুদের চেতনা, জ্ঞান ও বোধশক্তি অনেক উন্নত হয় এবং দ্রুত বিকাশ ঘটে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা শুধু একটি নতুন ভাষাই শিখে না, একই সাথে ঐ দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে যা তাকে আরো পরিণত ও সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করে।
বিদেশী ভাষার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা দীর্ঘদিন বিদেশে দাপ্তরিক কর্মে নিযুক্ত থেকে দেশে ফিরেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিভাগীয় শহর ও বড় জেলাসমূহে এরকম আঞ্চলিক কেন্দ্র খোলা যেতে পারে। এখানে উল্লেখ্য যে, ইউরোপের বহু উন্নত ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে (যেমন জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে) শুধু ঐ দেশের ভাষার উপর দক্ষতা থাকলে বিনাবেতনে ও বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। প্রাথমিকভাবে কিছু নির্বাচিত বিদ্যালয়ে ৩য়/৪র্থ শ্রেণি হতে বিদেশী ভাষার পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে যা উচ্চ মাধ্যমিক বা তদুর্দ্ধ পর্যায় পর্যন্ত চালু থাকবে যেন নির্দিষ্ট ভাষা অর্জনের পর তারা ডিপ্লোমা কোর্সের সমমান যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে যারা পরীক্ষা গ্রহণ ও মান যাচাই সাপেক্ষে সনদপত্র প্রদানে ভূমিকা রাখবে।
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও বিদেশী ভাষার যথেষ্ট গুরুত্ব থাকায় যুক্তিসংগত কারণেই প্রাথমিক পর্যায় হতেই এর চর্চা থাকা উচিত। বিদেশী ভাষায় পারদর্শী হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেরা উচ্চ বেতন পাওয়ার পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে। তারা বিভিন্ন দেশের সমাজে মিশে গিয়ে আমাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে পারবে। ভাষায় পারঙ্গম দক্ষ কর্মী বিদেশে থাকলে আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রভাবও বৃদ্ধি পাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতঃমধ্যে বিপুল জনসংখ্যাকে বোঝা হিসেবে বিবেচনা না করে জনসম্পদ হিসেবে বিবেচনা ও রুপান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যায়ক্রমে সঠিকভাবে বিদেশী ভাষার প্রচলন শুরু হলে খুব অল্প সময়েই আমরা আরো ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করবো। এতে করে কর্মীরা আত্মবিশ্বাসী হবে এবং বিদেশেও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

