নিরেন দাস(জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ভ্যান চাকল কে জিম্মি করে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে এনে আক্কেলপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপু"র নাম উল্লেখ করে নাম জড়িয়ে গত ৩রা নভেম্বর রবিবার আক্কেলপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়।
তবে এ ঘটনায় প্রকৃত ২ জন অপরাধীকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেছেন আক্কেলপুর থানা পুলিশ।
এলাকাবাসি ও থানা সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত অপরাধীরা উপজেলার পৌর শদরের পশ্চিম আমুট্র গ্রামের লিটন কসাই এর স্ত্রী খাদিজা বেগম ও কাবেজ উদ্দীন মন্ডল এর ছেলে লিটন কসাই এরা দুজন স্বামী স্ত্রী। তাদের মেয়ে ও জামাই এ উপজেলায় একটি দেহ ব্যবসায়ী প্রতারক চক্র বলে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত।
অপরদিকে জয়পুরহাট নোটারী পাবলিকের কার্যালয় এফিডেভিটের মাধ্যমে যুবলীগ নেতা সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপুর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে বাদী ভ্যান চালক মুঞ্জুর তার দেওয়া লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমি প্রতিজ্ঞা পূর্বক বলিতেছি যে আক্কেলপুর থানার মামলা নাং (০৩) তারিখঃ- ০৩-১১-১৯-ইং জি-আর- ২৭৫/১৯ (আঃ) ধারা ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৩৮৬/৪১১/৫০৬ দঃ বিঃ মামলার এজাহারকারী আসামী সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপুকে আসামী শ্রেণী ভুক্ত করিয়াছি। আসামী সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপু এর সহিত মামলার বিষয় লইয়া স্থানীয় ভাবে আমার আপোষ মিমাংসা হইয়াছে। আসামী সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপু এর বিরুদ্ধে আমার কোন প্রকার অভিযোগ নাই। আসামী টিপু অত্র মামলা হইতে অব্যাহতি পাইতে বা খালাস পাইতে আমার কোন আপত্তি নাই। আমি স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে অন্যের বিনা প্ররোচনায় ঘোষণা করছি বলে পাবলিক নোটারীতে বাদী মুঞ্জু সাক্ষর করেছেন।
পরে বাদী ভ্যান চালক মুঞ্জুর সাংবাদিকদের জানান একটি প্রভাবশালি কুচক্রী মহল আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলগত ভাবে থানা পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে আক্কেলপুর পৌর সদরের পুরাতন বাজার এলাকার মৃতঃ বছির উদ্দীনের ছেলে আক্কেলপুর পৌর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপুর নামও মামলায় দিয়েছে।
থানার মামলার বিবরণে জানা যায়, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রাজকান্দা গ্রামের ভ্যানচালক মুঞ্জু হোসেন গত ২রা নভেম্বর শনিবার আক্কেলপুর পুরাতন বাজারের এক ফিডের দোকান থেকে মুরগীর খাদ্য নিয়ে এক খামারে যাওয়ার পথে কিশোরের মোড় নামক এলাকায় রাত ৮ টার পর লিটন ও খাদিজা তার ভ্যানের পথ রোধ করে বলে তার সাথে জরুরী কথা আছে।
তারা দুজন পূর্ব পরিচিত হওয়ায় লিটন ও খাদিজা তাদের ভাড়া বাড়ির স্বয়ন কক্ষে নিয়ে যায় মুঞ্জ কে। তারপর তাকে ঘরে ভিতর আটকে রেখে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে ফোলা জখম করে।
তখন মুঞ্জুর কাছে থাকা মুরগীর খাদ্যের ১১ হাজার টাকা তারা জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। এরপর লিটন মোবাইল ফোনে আক্কেলপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপুকে ফোন করে ঘটস্থলে আসতে বলেন। তারপর টিপু মুঞ্জুর কাছে আরও ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে ছাড়বে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভ্যান চালকের আত্বীয় লেমনকে খবর দিলে সে ঘটনাস্থলে এসে শোনে টিপুকে ১লাখ দিতে হবে। তাদের কাছে ১লাখ টাকা না থাকায় ২২ হাজার টাকা রফাদফা করে মুঞ্জুকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে বিষয়টি থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার উপস্থিতি টের পেয়ে যুবলীগ নেতা টিপুসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন পালিয়ে গেলেও এসময় স্বামী-স্ত্রী লিটন ও খাদিজা কে আটক করা হয়েছে এবং মুঞ্জুর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এমন ভিক্তিহীন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো যুবলীগ নেতা সৈয়দ বদিউজ্জামান টিপু সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে কোনভাবেই জড়িত ছিলামনা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মূলকভাবে একটি কুচক্রী মহল আমার মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য আমার নাম জরিয়েছে । মামলার বিষয়ে আমি জানতে পারলে জয়পুরহাট জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিষয়টি অবগত করি এবং মামলার বাদী ভ্যান চালক মুঞ্জুর বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বললে মুঞ্জু প্রভাবশালী কোন মহলের প্রভাবে তার নাম থানায় বলেছেন। তাদের নাম প্রকাশ না করলেও সে তার ভুল বুঝতে পেরে ৪ঠা নভেম্বর সোমবার জয়পুরহাট জেলা আদালতে স্ব শরিরে হাজির হয়ে জয়পুরহাট জেলা নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এভিডেভিট করে মামলা থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করেছেন।
যুবলীগ নেতা টিপু আরও জানান তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগের কোন সত্যতা যাচায় নাকরে দৈনিক তুলশী গঙ্গা নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আক্কেলপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি শ্রীঃ নরেশ চন্দ্র দাশের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এটা কি করে সম্ভব যে একজন ভ্যান চালকের কাছে ১১ হাজার টাকা থাকে এটা বিশ্বাস যোগ্য নয় আমার সম্পাদক সহ আমার প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের মানক্ষুণ্ণ করার জন্য কিছু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বিকার হয়েছেন বলেই সত্যের জয় হয়েছে এবং বাদী তার ভুল বুঝতে পেরে মামলা থেকে আমার সম্পাদকের নাম এভিডেভিট করে আদালতের মাধ্যমে বাদ দিয়েছেন।
তিনি পুলিশের নিকট বিনীত অনুরোধ জানিয়ে বলেন কোন সাংগঠনিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার আগে তার পিছনে কতটা সত্যতা রয়েছে তা তদন্ত করে মামলা নিতে এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোড় দাবিও জানান।

