করোনায় বেকায়দায় বেদে সম্প্রদায় - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৬, ২০২০

করোনায় বেকায়দায় বেদে সম্প্রদায়

ফরিদপুর প্রতিনিধি :

আমরা ভাসমান মানুষ। কয়েকদিন পর পর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। সেখানেই থাকতে হয়, স্ত্রী সন্তান নিয়ে। করোনার কারণে এবার ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আটকে গেছি। কাজকর্ম কিছু নেই, তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে। পৌর মেয়রের সহায়তায় ১২ দিন আগে কিছু চাল পেয়েছিলাম। কম করে খেয়েও এক সপ্তাহের বেশি নিতে পারিনি। এখন কী খাব আমরা।

এভাবেই অসহায়ত্বের কথা জানান ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা সদর বাজারের লোকাল বাসস্ট্যান্ডের পাশে বারাশিয়া নদীর তীরে আশ্রয় নেয়া বেদে সম্প্রদায়ের সরদার মতি মিয়া।

ওই পল্লীর ৪০টি পরিবারের এখন করুণ অবস্থা। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে নারী, শিশুসহ শতাধিক মানুষ। 

বেদে আসলাম হোসেন, লাদেনসহ কয়েকজন বলেন, বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারি না। দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়াই খাবারের সন্ধানে। এক সময় নৌকায় নৌকায় থাকতাম। মানুষের রোগ-ব্যাধি উপশমের জন্য ঝাড়ফুঁক ও গাছ-গাছড়া বিক্রি করতাম। নদীপথ সীমিত হওয়ায় স্থল পথে গ্রামে গ্রামে যাই। ওইসব গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় ছেলে-মেয়েদের খাইয়ে পরিয়ে বড় করি। কিন্তু ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এসে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আটকা পড়ে গেছি। তাঁবুবন্দি হয়ে আছি এখানে। ১১-১২ দিন আগে কিছু খাবার পেয়েছিলাম। এক সপ্তাহ আগে তা ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় বন্দি থাকতে হবে তাতো বুঝতে পারিনি। ঘরে খাবার নেই। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। সবকিছু বন্ধ। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না আমরা।

সাগর মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকার যা বলছে আমরা সব মেনে চলার চেষ্টা করছি। কিন্তু তিন-চার দিন আগে তো ঘরে চাল ফুরিয়ে গেছে। এখন কী করব জানিনা। সবার পেটে ক্ষুধা। ছোট বাচ্চাগুলোর দিকে তাকানো যায় না। যে করে হোক আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। এ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এ বেদে।

বেদে পল্লীর সরদার মতি মিয়া জানান, ১১-১২ দিন আগে এই জায়গার মেয়রের পক্ষ থেকে কিছু চাল দেয়া হয়েছিল। ওই চাল প্রায় এক সপ্তাহ আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখন শতাধিক মানুষ এখানে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

এবিষয়ে পৌর মেয়র সাইফুর রহমান জানান, 'বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে একবার সহয়তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের আবারো দেওয়া হবে। আমি চেষ্টা করছি, করোনায় কর্মহীন পৌরসভার সকল হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে কমপক্ষে একবার করে হলেও সহয়তা পৌঁছে দিবো।'

Post Top Ad

Responsive Ads Here