জেলা প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরে প্লাষ্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির লাশ দেখে চেনার উপায় নেই। ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে স্বজনদের কাছে তা হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
কারখানার শ্রমিকদর মধ্যে নিখোঁজ পাঁচজনের মধ্যে উপজেলার ঘোড়াঘাট গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী আব্দুল খালেক, সান্দিড়া গ্রামের ৩০ বছর বয়সী শাহজাহান ও ১২ বছর বয়সী সজিবের স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। তাদের আহাজারিতে ঘটনাস্থলের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা নিয়ে তারা অপেক্ষা করছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, কারখানা থেকে যে পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ওইখানে তিনজনের লাশ রয়েছে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২ টার দিকে সান্তাহার পৌর শহরের হবীর মোড় এলাকায় ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার ধরে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঐ প্লাস্টিক কারখানায় ওয়ানটাইম প্লেট সামগ্রী তৈরি করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রায় ৪৫ জন শ্রমিক সেখানে কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে হঠাৎ করেই কারখানার এক কোণায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় কর্মরত শ্রমিকরা ভয়ে পেয়ে কারখানা থেকে বের হতে শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে নওগাঁ ও বগুড়া জেলার ১২টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। পরে কারখানা থেকে পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে তাদের লাশ দেখে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
কারখানার চার মালিকের মধ্যে একজন সান্তাহার পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট। তিনি সান্তাহার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট জানান, কারখানাতে সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। কীভাবে কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনি বলা যাচ্ছে না। খবর পাওয়া মাত্রই তিনি কারখানায় ছুটে যান।
আদমদীঘি থানার ওসি মো. জালাল উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের শরীর এতটাই পোড়া যে লাশ দেখে চেনার উপায় নেই। স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক একেএম মুরশেদ জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের ঐ প্লাস্টিক কারখানায় তারা ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বগুড়ার তিন উপজেলার দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। বগুড়া-নওগাঁর ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।
তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। মৃতদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক (এমডি) আব্দুল মালেক জানান, দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া পাঁচজন শ্রমিকের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।