
"সাদাকালো হয়েও চিররঙিন বগুড়ার সেই বনানী | সময় সংবাদ"
মাসুম হোসেন, বগুড়া
একটা সময় যখন বিনোদনের ছিল না অসংখ্য মাধ্যম। সেসময় সপরিবারে সিনেমা হলে যাওয়ার দিনটি ছিল উৎসবমুখর। যেন ওই দিনটির জন্যই ছিল যত অপেক্ষা। এমন সময়ে বিনোদনের এক মাধ্যমের নাম বনানী।
তবে এখন বনানী নামের সেই সাদাকালো সিনেমা হল আর নেই। চিরদিনের জন্য বনানীর পর্দা নামলেও সেই নামটি আজও রয়ে গেছে। চার যুগ আগেই বনানী সিনেমা হল বন্ধ হয়। কিন্তু আজও দিনরাতে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা সেখানে। শুধু সিনেমা হলকে কেন্দ্র করেই সেখানে একটি বন্দর গড়ে ওঠে। সেই বন্দরের নাম বনানী। অথচ সিনেমা হলটি নির্মাণ করার আগে ওই এলাকার নাম ছিল সুলতানগঞ্জ। যে নাম দশ বছরেই পাল্টে হয় বনানী।
বগুড়া শহরের প্রাণ কেন্দ্র সাতমাথা। সেই সাতমাথার দক্ষিণ দিকে ৫ কিলোমিটার দূরে বনানী বন্দরের অবস্থান। ১৯৬৫ সালে টিনের বেড়া দিয়ে সেখানে গড়ে তোলা হয় বনানী সিনেমা হল। বাল্যবন্ধু সিনেমা প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে বনানীর যাত্রা শুরু হয়। খুব বেশি সময় এই হলটি চালু ছিল না। ১৯৭৪ সালেই হয়ে যায় বন্ধ। চিরদিনের জন্য পর্দা নামে বনানীর। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সরকার ওই সিনেমা হলের জায়গাসহ আশেপাশের জায়গা অধিগ্রহণ করে নেয়।
বনানী নামটির সঙ্গে স্মৃতি জড়িয়ে আছে অনেক মানুষের। তাদেরই একজন ফনীন্দ্রনাথ সরকার। তিনি একজন মুদি দোকানি। বগুড়ার পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বেজোড়া গ্রামের বাসিন্দা এই ফনীন্দ্রনাথ। ১৯৬৫ সালে ২১ বছরের যুবক ছিলেন তিনি। সুযোগ পেলেই যেতেন সিনেমা হলে। বনানী সিনেমা হলে তার প্রথম দেখা ছবির নাম বাল্যবন্ধু।
ফেলে আসা দিনের কথাগুলো বলার সময় তার চোখে-মুখে আনন্দের দেখা মেলে। তার খুব ইচ্ছে করছে ফিরে পেতে আগের সেই দিনগুলো। এমনটাই প্রকাশ করেন তিনি। সেই ফনীন্দ্রনাথের বয়স এখন ৬৮ বছর।
ডেইলি বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘বনানী হলের প্রথম সিনেমা বাল্যবন্ধু। আমি হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখেছি। সেসময় আমি খুব সিনেমা দেখতাম। বনানী হলের নিয়মিত দর্শক ছিলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘বনানী সিনেমা হলে একসঙ্গে কতজন বসে সিনেমা দেখতেন তা এখন মনে করতে পারছি না। তবে ২০০-২৫০ জন একসঙ্গে সেই হলে সিনেমা উপভোগ করতেন। সেসময় অধিকাংশ মানুষই সপরিবারে সিনেমা দেখতে আসেতন। এছাড়াও কিশোর-যুবকেরা একত্র হয়ে সিনেমা দেখতেন আসতেন।’
